পিয়া রায়
প্রতিবছর ৩ জুন পালন করা হয় বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস বা World Bicycle Day। জাতিসংঘ ২০১৮ সালে এই দিনটিকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়, যার মূল উদ্দেশ্য—একটি সহজ, টেকসই ও স্বাস্থ্যবান পরিবহনের গুরুত্ব তুলে ধরা। আজকের দিনটি শুধুই একটি বাহনের প্রশংসা নয়, বরং একটি জীবনদর্শনেরও উদ্যাপন।
যে সময় আমাদের চারপাশ ভরে উঠছে দুষণের গন্ধে, যখন ট্রাফিক জ্যাম ও ফুয়েলের দাম মানুষকে বিপর্যস্ত করছে, ঠিক তখনই বাইসাইকেল হতে পারে এক নিঃশব্দ বিপ্লবের পথ। এটি শুধু পরিবেশ বান্ধব নয়, বরং এটি আমাদের স্বাস্থ্যরক্ষায় এক পরীক্ষিত উপায়। প্রতিদিন যদি অন্তত ৩০ মিনিট সাইকেল চালানো যায়, তবে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো অসুখ থেকেও দূরে থাকা সম্ভব।
সাইকেল চালালে না হয় না জ্বালানির ব্যবহার, না হয় কোনো কার্বন নিঃসরণ। এতে যেমন জ্বালানি বাঁচে, তেমনি পরিবেশের ভারসাম্যও বজায় থাকে। এমনকি শহরের রাস্তায় যদি একটি নির্দিষ্ট অংশ সাইকেল চলাচলের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়, তবে ট্রাফিক ও শব্দদূষণ অনেকটাই কমে যাবে।
সাইকেল এমন এক বাহন যা ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই ব্যবহার করতে পারে। উন্নয়নশীল দেশে স্কুলগামী মেয়েরা বাইসাইকেলের মাধ্যমে অনেক দূরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পৌঁছতে পারছে। এটি নারী শিক্ষার অগ্রগতিতেও ভূমিকা রাখছে।
বিশ্বজুড়ে সাইকেলপ্রেমীরা আজকের দিনে র্যালি, কর্মশালা, সাইকেল রাইড ও সচেতনতামূলক প্রচার করে থাকেন। বাংলাদেশ বা ভারতের মতো দেশেও বিভিন্ন NGO ও পরিবেশবান্ধব সংগঠন এই দিনটিকে কেন্দ্র করে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালায়।
সাইকেল কেবল দু’টি চাকা আর প্যাডেলের বাহন নয়—এটি এক পরিবর্তনের প্রতীক। এটি সুস্থ জীবন, সবুজ পৃথিবী ও সামাজিক সমতার দিকে এগিয়ে চলার প্রতিচ্ছবি। আসুন, আজকের এই World Bicycle Day-তে আমরা প্রতিজ্ঞা করি—প্রতি সপ্তাহে অন্তত একদিন সাইকেল চালিয়ে আমরা আমাদের নিজেদের, সমাজ এবং পৃথিবীকে আরও একটু ভালো রাখার চেষ্টা করব।