নরেন্দ্রনাথ কুলে
পশ্চিমবঙ্গে মেধার মূল্যায়ন আছে কিনা, সে প্রশ্ন আবারো উঠলো । সম্প্রতি ১৬০০ ডাক্তারদের মেধাভিত্তিক পোস্টিং-এর যে ব্যবস্থা এতদিন বাংলায় ছিল তা এই মূহুর্তে এইবার লঙ্ঘিত হল । না, লঙ্ঘিত বলাটা ঠিক হবে না । কারণ এটা অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়নি । এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায় তার উত্তর মিলেছে । তিনি তাই অনায়াসে বলতে পেরেছেন যে মেধা-টেধা কিছু নয়, সরকার যা চাইবে তাই হবে । সত্যিই তো সরকার না চাইলে কিছুই হয় না । সরকার চেয়েছে বলে আরজিকর অভয়া হত্যার প্রমাণ লোপাট হয়েছে । এমনভাবে করা হয়েছে যে সিবিআই তার হদিস পেতে এখনও পর্যন্ত হিমসিম খাচ্ছে । সেটাই বাংলার সরকারের কাছে প্লাস পয়েন্ট । অতি সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে জল করে দিতে সিবিআই-এর তদন্তে উঠে আসছে না কেন বলতে সুবিধা হচ্ছে । কিংবা বিচারাধীন বিষয় বলে সরকারের কিছু করার নেই বলে বলা সহজ হয়ে উঠছে । ঠিক যেমন যোগ্য আর অযোগ্য প্রশ্নে শিক্ষকদের চাকরি চলে যায় । এই ঘটনায় মহামান্য আদালত আর বিরোধীদের কারণ বলে মূল প্রশ্নটা ঘুরিয়ে দিতে সুবিধে হচ্ছে । অযোগ্যদের টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি করা হল । অথচ সরকার যোগ্যদের পাশে নেই। অযোগ্যদের হয়ে সরকারের সচেতনতা অনেক বেশি । তা না হলে অযোগ্যদের তালিকার কথা এড়িয়ে গিয়ে তাদের চাকরি নিশ্চয়তা নিয়ে সরকার আজ যেন বেশি ভাবিত । তাই মহামান্য আদালতের নামে সিবিআই-এর নামে সাধারণ মানুষকে এবং চাকরিহারাদের সামনে এমন ভান করতে হচ্ছে যে এর জন্য সরকার কোনভাবেই দায়ী নয় । সরকারের সাথে যুক্ত মানুষজন দায়ী হলে সরকার দায়ী নয় তা বলা যায় না । কিন্তু ডাক্তারদের ক্ষেত্রে সরকারী আধিকারিক বলে দিয়েছেন সরকারের কাছে মেধা-টেধা কিছুই নয় । তাই ১৬০০ ডাক্তারদের মধ্যে মাত্র তিনজনের ক্ষেত্রে সেটা প্রযোজ্য হয়নি । এই তিনজন ছাড়া আর কোন বিতর্ক নেই তো । শতাংশের হিসাবে একেবারেই নগণ্য। এই নগণ্য ঘটনা নিয়ে এত হইচই হওয়ার কি আছে ? হইচই হচ্ছে এই কারণে এই তিনজন ডাক্তার আরজিকর আন্দোলনের মুখ । এই মুখগুলোকে বিকৃত করে দিলে সমাজকে হয়তো মূক করে দেওয়া যাবে । এই মুখ তিনটিকে বিকৃতি করার জন্য সরকারের হয়ে উকালতি করার এখন লোকের একেবারেই অভাব হচ্ছে না । সমাজকে মূক করার জন্য সরকারের ভাবনা-যে কাজ করছে তা কি বলা যায় না । এই সরকারের মুখের কথা ছিল-- বদলা নয় বদল চাই। এ তো মুখের কথাই । বদলা নেওয়ার প্রবণতা থাকবে না তা কিন্তু কখনও বলেনি। তাই সরকার পোষিত দুর্নীতি যতই হোক, তার প্রতিবাদ হলে বদলা নেওয়ার প্রবণতা শুধু মুখে প্রকাশ পাচ্ছে তা নয়, তা কার্যকর করতে এতটুকুও সময় নেয়নি । শুধু সুযোগের অপেক্ষায় । সেই সুযোগ যখন এসেছে তার সদ্ব্যবহার হবে এটাই তো স্বাভাবিক। সেই স্বাভাবিকতায় ডাক্তার শিক্ষকের মেধা-টেধা সরকারের কাছে তুচ্ছ।
পশ্চিমবঙ্গে মেধার মূল্যায়ন আছে কিনা, সে প্রশ্ন আবারো উঠলো । সম্প্রতি ১৬০০ ডাক্তারদের মেধাভিত্তিক পোস্টিং-এর যে ব্যবস্থা এতদিন বাংলায় ছিল তা এই মূহুর্তে এইবার লঙ্ঘিত হল । না, লঙ্ঘিত বলাটা ঠিক হবে না । কারণ এটা অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়নি । এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায় তার উত্তর মিলেছে । তিনি তাই অনায়াসে বলতে পেরেছেন যে মেধা-টেধা কিছু নয়, সরকার যা চাইবে তাই হবে । সত্যিই তো সরকার না চাইলে কিছুই হয় না । সরকার চেয়েছে বলে আরজিকর অভয়া হত্যার প্রমাণ লোপাট হয়েছে । এমনভাবে করা হয়েছে যে সিবিআই তার হদিস পেতে এখনও পর্যন্ত হিমসিম খাচ্ছে । সেটাই বাংলার সরকারের কাছে প্লাস পয়েন্ট । অতি সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে জল করে দিতে সিবিআই-এর তদন্তে উঠে আসছে না কেন বলতে সুবিধা হচ্ছে । কিংবা বিচারাধীন বিষয় বলে সরকারের কিছু করার নেই বলে বলা সহজ হয়ে উঠছে । ঠিক যেমন যোগ্য আর অযোগ্য প্রশ্নে শিক্ষকদের চাকরি চলে যায় । এই ঘটনায় মহামান্য আদালত আর বিরোধীদের কারণ বলে মূল প্রশ্নটা ঘুরিয়ে দিতে সুবিধে হচ্ছে । অযোগ্যদের টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি করা হল । অথচ সরকার যোগ্যদের পাশে নেই। অযোগ্যদের হয়ে সরকারের সচেতনতা অনেক বেশি । তা না হলে অযোগ্যদের তালিকার কথা এড়িয়ে গিয়ে তাদের চাকরি নিশ্চয়তা নিয়ে সরকার আজ যেন বেশি ভাবিত । তাই মহামান্য আদালতের নামে সিবিআই-এর নামে সাধারণ মানুষকে এবং চাকরিহারাদের সামনে এমন ভান করতে হচ্ছে যে এর জন্য সরকার কোনভাবেই দায়ী নয় । সরকারের সাথে যুক্ত মানুষজন দায়ী হলে সরকার দায়ী নয় তা বলা যায় না । কিন্তু ডাক্তারদের ক্ষেত্রে সরকারী আধিকারিক বলে দিয়েছেন সরকারের কাছে মেধা-টেধা কিছুই নয় । তাই ১৬০০ ডাক্তারদের মধ্যে মাত্র তিনজনের ক্ষেত্রে সেটা প্রযোজ্য হয়নি । এই তিনজন ছাড়া আর কোন বিতর্ক নেই তো । শতাংশের হিসাবে একেবারেই নগণ্য। এই নগণ্য ঘটনা নিয়ে এত হইচই হওয়ার কি আছে ? হইচই হচ্ছে এই কারণে এই তিনজন ডাক্তার আরজিকর আন্দোলনের মুখ । এই মুখগুলোকে বিকৃত করে দিলে সমাজকে হয়তো মূক করে দেওয়া যাবে । এই মুখ তিনটিকে বিকৃতি করার জন্য সরকারের হয়ে উকালতি করার এখন লোকের একেবারেই অভাব হচ্ছে না । সমাজকে মূক করার জন্য সরকারের ভাবনা-যে কাজ করছে তা কি বলা যায় না । এই সরকারের মুখের কথা ছিল-- বদলা নয় বদল চাই। এ তো মুখের কথাই । বদলা নেওয়ার প্রবণতা থাকবে না তা কিন্তু কখনও বলেনি। তাই সরকার পোষিত দুর্নীতি যতই হোক, তার প্রতিবাদ হলে বদলা নেওয়ার প্রবণতা শুধু মুখে প্রকাশ পাচ্ছে তা নয়, তা কার্যকর করতে এতটুকুও সময় নেয়নি । শুধু সুযোগের অপেক্ষায় । সেই সুযোগ যখন এসেছে তার সদ্ব্যবহার হবে এটাই তো স্বাভাবিক। সেই স্বাভাবিকতায় ডাক্তার শিক্ষকের মেধা-টেধা সরকারের কাছে তুচ্ছ।
এই সরকারের কাছে মেধা হবে রাজনৈতিক মেধা । যে-কোন উপায়ে এই সরকারকে ভোটে ফিরিয়ে আনাই সেই মেধার তার কাজ । তুমি ডাক্তার হতে পার, তুমি শিক্ষক হতে পার, তুমি উকিল হতে পার । এই মেধা যখন সরকারকে ভোটে ফিরিয়ে আনার কাজ করবে, তবেই না মেধা । নইলে সে-মেধার মূল্যায়ন শূন্য । যে মেধা সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে, সরকারের পোষণনীতি তোষণনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে সে-মেধা মেধাই নয় । তাই যোগ্য শিক্ষকদের যোগ্যতা ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই করতে হয়, ডাক্তারদের মেধা-ভিত্তির বিচার পেতে লড়াই করতে হয় । অথচ সেই লড়াইয়ের মূল্য সরকারের কাছে শূণ্য। আসলে কতিপয় শিক্ষক ও ডাক্তারদের লড়াইয়ে বাংলার ভোটে প্রভাব পড়বে না । তাই এঁদের লড়াই সরকারের কাছে গুরুত্বহীন । । চল্লিশ শতাংশ ভোটারকে ভোটের হুজুগে মাতিয়ে রাখলে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সত্যের হয়ে শিক্ষক ও ডাক্তারদের লড়াই নিয়ে, দুর্নীতি নিয়ে, সমাজ নিয়ে তাঁরা ভাবনার ধার ধারে না । এই নিশ্চয়তায় সরকার ও সরকার পোষিত দুর্নীতি এমনিতেই আড়াল হয়ে যায় । শুধু দু-একটা চিৎকার হবে তাতে সরকারের কি যায় আসে !